Header Ads

এই গরমে ত্বকের যত্ন



আদিকাল থেকেই ত্বক সুরক্ষায় মানুষের অসীম প্রয়াস। প্রায় সবারই বিশ্বাস, মানুষ বুড়ো হলেই কেবল ত্বকের গায়ে ভাঁজ পড়ে ত্বক বুড়িয়ে যায়। কথাটা সত্য হলেও পুরোমাত্রায় কিন্তু সত্য নয়।
এসময় সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটি ত্বককে বুড়িয়ে দেয় সেটি হচ্ছে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি। বৃদ্ধ থেকে শিশু যে কারও ত্বককেই বুড়িয়ে দিতে পারে এই সূর্যরশ্মি। শুধু কি তাই? ত্বকের বিবর্ণ হওয়া থেকে শুরু করে ত্বকের ক্যান্সার পর্যন্ত করে দিতে পারে এই উত্তাপ্তজনিত সূর্যলোক। এই রশ্মির প্রভাবে ত্বকের কোষগুলো মরে গিয়ে ত্বক হারিয়ে ফেলে তার স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য। টানটান ত্বকের গায়ে শুরু হয় ভাঁজ আর ঔজ্জল্য বিহীন বিবর্ণ ত্বক। তাই ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে এই উত্তপ্ত দিনগুলোতে আমাদের এই সামান্য প্রয়াস।
প্রথমেই বলতে হয়, ত্বককে সুন্দর তরতাজা আর উজ্জ্বল রাখতে হলে অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি অর্থাৎ অতিবেগুনী রশ্মি এড়িয়ে চলতে হবে। তা না হলে ত্বক বুড়িয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে একটি ছাতা বা টোকা জাতীয় টুপি ব্যবহার করা যেতে পারে। জারা এগুলো রুচিসম্মত মনে না করেন তারা যে কোন একটি উৎকৃষ্ট সানস্ক্রিন   লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
 এখন প্রশ্ন আসতে পারে কোন সানস্ক্রিন আপনি ব্যবহার করবেন? এ ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনার ত্বকের রঙ বিবেচনায় আনতে হবে। যে ত্বকের রঙ যত সাদা, সে ত্বক সূর্যলোকে ততো বেশি নাজুক।
মনে রাখতে হবে, সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম কেবল সূর্যের 'বি' অতিবেগুনী রশ্মিকে প্রতিহত করতে সক্ষম। আরেকটি কথা, বাজারে অনেক রকমের সানস্ক্রিন আছে এবং সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর ও উল্লেখ করা আছে যেমন সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর আছে ১৫,৩০,৪৫,৬০ ইত্যাদি।
আমাদের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে তা ১৫-এর নিচে জেন না হয়, আবার ৩০-এর বেশি ব্যবহারের কারণও সুস্পষ্ট নয়। ত্বকের জন্য এসপিএফ ৮ থেকে ১২ হলেই যথেষ্ট, কারনজে কালো  ত্বকের গায়ে যে মেলামিন নামের পদার্থ থাকে সেটাই প্রাকৃতির সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করে।
এবার আসা জাক সাবান ব্যবহারের ক্ষেত্রে। বর্ষা আর গরমকালে দিনে দুবার সাবান ব্যবহার করাই উত্তম। তবে সাবান জেন বেশি ক্ষারযুক্ত না হয় সেটাও বিবেচনায় রাখতে হবে। কারন অতিরিক্ত ক্ষার ত্বকের ক্ষতি করে। সে ক্ষেত্রে ভালো কোন বেবি সোপ বা গ্রিসারিন সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে।
এমন অনেকে আছেন যারা একদমই সাবান ব্যবহার করেন না। সেটাও কিন্তু ঠিক নয়, কারন এতে ত্বকের ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে।


ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে ত্বকের কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তাই ত্বকের  আদ্রতা রক্ষা নিশ্চিত করা খুবই প্রয়োজন। সে জন্য প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি খাওয়া খুবই প্রয়োজন।
গরমকাল এলে ঘামাচি হয় অনেকেরই। এটি  একটি বিব্রতকর সমস্যা। চুলকানি ছাড়াও এতে ত্বক খসখসে হয়ে পড়ে। তাই ঠাণ্ডা ঘরে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরের মধ্যে বাতাসের প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। সার্বক্ষণিক একটি ফ্যানের সুব্যবস্থা থাকতে হবে।
যারা অর্থনৈতিক ভাবে সামার্থ্যবান তারা একটি এয়ারকুলার ব্যবহার করতে পারেন। মনে রাখবেন এসির নিচে থাকলে একদমই ঘামাচিমুক্ত থাকা সম্ভব। ঘামাচির প্রবণতা থাকলে গরমকালে কম ক্ষারযুক্ত সাবান দুবার ব্যবহার করা ভালো।
তকে অতিরিক্ত এ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে ত্বক মোটা ও খসখসে হয়ে যায়। ত্বককে শুষ্ক রাখা খুবই অপরিহার্য । আমাদের দেশে গরমকালে বাতাসের আদ্রতা এমনিতেই বেশি। ঘাম হয় বেশি। ফলে পরিধেয় বস্র খুব সহজেই ভিজে গিয়ে থাকে।
মনে রাখবেন, ভেজা বস্র পড়ে থাকলে ত্বকে দাগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশ বেড়ে যাবে। তাই ঘামে বস্র ভিজে গেলেই তা বদলে শুষ্ক ও পাতলা কাপড় পড়ে নিতে হবে।
তা ছাড়া গোসলের পর দেহের ভাঁজগুলোতে জেন পানি জমে না থাকে সে ব্যাপারেও সচেস্ট হতে হবে, দেহের ভাঁজ স্থানগুলো ছত্রাক জন্মানোর উর্বর ক্ষেত্র। আর তার ওপর যদি থাকে ভেজা, তাহলে ত কথাই নেই। তেল ব্যবহারের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। গরমকালে তেল ব্যবহার না করাই উচিত।
পাউডার ব্যবহার করার প্রবনতা আছে আমাদের অনেকের মধ্যে। দেহের ভাজযুক্ত স্থানগুলোতে পাউডার ব্যবহার না করাই ভালো। কারন পাউডারের সঙ্গে ঘাম মিশে একটা স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে, জা কিনা ছত্রাক জন্মানোর পক্ষে আরও সহায়ক হতে পারে।
ত্বক ভালো রাখতে ভিটামিন 'এ' যুক্ত খাবার শীত কিংবা গ্রীষ্মে সব সময়ই ভালো।


No comments

Powered by Blogger.